বেরিং প্রণালী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বেরিং প্রণালী (কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি)
বেরিং প্রণালীর ঠিক মাঝখানে অবস্থিত ডায়োমেড দ্বীপপুঞ্জ; বামেরটি রাশিয়ার, ডানেরটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আওতাধীন

বেরিং প্রণালী (ইংরেজি: Bering Strait) এশিয়াউত্তর আমেরিকা মহাদেশ দুইটিকে পৃথককারী জলাশয়। প্রণালীটি উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের বেরিং সাগরকে উত্তর মহাসাগরের চুক্‌চি সাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে।

১৬৪৮ সালে রুশ অভিযানকারী সেমিয়োন ইভানোভিচ দেজনিয়ভ (Semyon Ivanovich Dezhnyov) বেরিং প্রণালী আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে ১৭২৮ সালে ডেনীয় নাবিক ভিতুস বেরিং এবং তারও পরে ব্রিটিশ নাবিক ক্যাপ্টেন জেমস কুকফ্রেডেরিক উইলিয়াম বিচি এখানে আসেন।

প্রণালীটির সবচেয়ে সরু অংশ রাশিয়ার দেজনিয়ভ অন্তরীপ (Dezhnyova Mys) এবং আলাস্কার প্রিন্স অফ ওয়েল্‌স অন্তরীপের মধ্যে অবস্থিত। এই দুই অন্তরীপের মধ্যবর্তী দূরত্ব ৮২ কিলোমিটার। দুই অন্তরীপের মধ্যস্থলে ডায়োমিড দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত। প্রণালীটির গভীরতা ৩০-৫০ মিটার।

আবিষ্কারের ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৬৫৪ সালে রুশ বণিক ফেদত আলেক্সেইয়েভ সাইবেরিয়ার কোলিমা উপদ্বীপের পূর্বে পোগিচা নদীর সন্ধানে রওনা দেন। এই ভ্রমণে তাঁর সহযোগী ছিলেন সেমিয়োন ইভানোভিচ দেজনিয়ভ। দেজনিয়ভই এই অভিযানে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে উত্তর মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে নৌপথে প্রবেশ করেন। কিন্তু তাঁর এই আবিষ্কারের কাহিনী রুশ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তখন পৌঁছেনি। রুশ সম্রাট মহান পিটার তাই জানতেন না সাইবেরিয়া উত্তর আমেরিকার সাথে যুক্ত কি না। পিটার তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন আগে রুশ সামরিক বাহিনীর একজন কমাণ্ডার ডেনীয় বংশোদ্ভুত ভিতুস বেরিং-কে এটা খুঁজে দেখার আদেশ দেন। বেরিং নৌপথে বেরিয়ে পড়েন এবং ১৭২৮ সালে বেরিং প্রণালী পুনরাবিষ্কার করেন, কিন্তু ভারী কুয়াশার কারণে তিনি সেবার উত্তর আমেরিকার স্থলভাগ দেখতে পাননি।

এরপর ১৭৪১ সালের জুন মাসে বেরিং আবার সদলবলে অভিযানে বের হন এবং এবার তিনি আলাস্কার স্থলভাগ দেখতে পান। ১৬ই জুন, সাধু এলিয়াসের দিবসে, দূর থেকে দেখে তিনি আলাস্কার সেন্ট এলিয়াস পর্বতের নামকরণ করেন। ঐ অভিযানেই ফেরার পথে বেরিং জাহাজ ভেঙে একটি দ্বীপে (যার বর্তমান নাম বেরিং দ্বীপ) আটকা পড়েন এবং সেখানেই শীতকালে মারা যান। বেরিং-এর এই অভিযানের ফলে উত্তর-পশ্চিম আমেরিকা (বর্তমান আলাস্কা) রাশিয়ার দখলে আসে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]