টয়োটা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
টয়োটা জিদোশা কাবুশিকি-গাইশা / Toyota Motor Corporation
Toyota Jidosha Kabushiki-gaisha
トヨタ自動車株式会社
ধরন Public (TYO: 7203) & (NYSETM)ট
শিল্প

Automotive Robotics Financial services

Biotechnology
প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৩৭
প্রতিষ্ঠাতা কিচিরো টয়োডা
সদর দপ্তর জাপান Toyota City, Japan;
Tokyo, Japan
প্রধান ব্যক্তি কীচিরো তোয়োদা (Founder),
Fujio Cho (Chairman and Representative Director),
Katsuhiro Nakagawa (Vice chairman and Representative Director),
Katsuaki Watanabe (President and Representative Director),
Shoichiro Toyoda (Honorary Chairman)[১]
পণ্য Economy/mainstream/luxury vehicles
আয় হ্রাস USD $203.26 billion (2009)[২]
বিক্রয় আয় হ্রাস USD $-4.56 billion (2009)[২]
নীট আয় হ্রাস USD $-4.33 billion (2009)[২]
মোট ইকুইটি হ্রাস USD $-5.54 billion (2009)[২]
কর্মীসংখ্যা 316,121[৩]
অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান 522
ওয়েবসাইট Toyota Worldwide
টয়োটা কোরোলা

টয়োটা মোটর কর্পোরেশন একটি জাপানী গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। এর সদর দপ্তর জাপানে অবস্থিত। ২০১০ সালে টয়োটা সারা বিশ্বে ৩০০,৭৩৪ জন মানুষকে চাকরি দেয় এবং ২০১১ সালে General Motors এবং Volkswagen Group কে পিছনে ফেলে উৎপাদনের দিক দিয়ে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি প্রস্তুতকারক হয়ে উঠে। উপার্জনের দিক দিয়ে বর্তমানে টয়োটা পৃথিবীর এগারতম বৃহত্তম কোম্পানি। ২০১২ সালের জুলাই মাসে কোম্পানিটির এক প্রতিবেদনে বলা হয় কোম্পানিটি ২০০ মিলিয়ন যানবাহন প্রস্তুত করেছে। এটি সিডান, এসইউভি, হালকা ট্রাক প্রভৃতি শ্রেণীর গাড়ি নির্মাণ করে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর কারখানা রয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা মোটর করপোরেশনের টয়োটা শব্দটি এসেছে এ কম্পানি মালিকদের আদিপুরুষ উদ্ভাবকদের রাজা খ্যাত সাকিচি তোয়োদা (Sakichi Toyoda) নাম থেকে। জাপানের নাগোয়ার (Nagoya) দক্ষিণ-পূর্বে মধ্য-দক্ষিণ হনসু (Honshu) অঞ্চলের কোরোমো (Koromo) নামের একটি শহর ছিল। ১৯৫৯ সালে এর নাম পাল্টে রাখা হয় টয়োটা সিটি (Toyota city)। অষ্টাদশ শতকের শেষ ও উনবিংশ শতকের শুরুর দিকে এ শহরের বাসিন্দারা রেশমি কাপড়ের কাচামাল, রেশম গুটিউত্পাদনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বলা বাহুল্য, হাতে চালানো তাতে খুবই ধীর গতিতে রেশম গুটি থেকে তৈরি হতো রেশমি কাপড়। পরবর্তী সময়ে দেশ-বিদেশে রেশমি কাপড়ের চাহিদা কমে যাওয়ায় সাকিচি তোয়োদা (Sakichi Toyoda) নামের ওই শহরের এক বাসিন্দা মনোনিবেশ করেন যন্ত্রচালিত তাত উদ্ভাবনের দিকে। এ কাজে দুটো পয়সার মুখ দেখতে শুরু করেন তিনি। নতুন কিছু করার আগ্রহের সৃষ্টি সেই থেকেই। এ আগ্রহ আরো বেড়ে যায় তার টয়োডা অটোমেটিক লুম কম্পানি উদ্ভাবিত এ রকম একটি মেশিনের পেটেন্ট বৃটেনের প্ল্যাট ব্রাদার্স (Platt Brothers)-এর কাছে ১০ লাখ ইয়েনে (Yen) (জাপানি মুদ্রা) বিক্রি থেকে। সে সময়ে প্রাপ্ত বিপুল ওই অর্থ সাকিচি টয়োডা বিনিয়োগ করেন গাড়ির ইঞ্জিন বানানোর কাজে। এ নতুন উদ্ভাবনী কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় সাকিচি টয়োডার ছেলে কিচিরো তোয়োদাকে (Kiichiro Toyoda)। ১৯৩৫ সাল নাগাদ প্রথমবারের মতো এ-ওয়ান মডেলের গাড়ির ইঞ্জিন উদ্ভাবনে সক্ষম হন কিচিরো টয়োডা। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি টয়োডা পরিবারকে।

আনুষ্ঠানিকভাবে টয়োটা মোটর কম্পানি লিমিটেডের জন্ম ১৯৩৭ সালের ২৮ আগস্ট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উচ্চারণ সুবিধার বিবেচনায় তোয়োদা (Toyoda) শব্দটিকে পাল্টে করা হয় টয়োটা (Toyota)। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা মোটর কর্পরেশনের সদর দফতর জাপানের টয়োটা সিটিতে।

আন্তর্জাতিক বাজার[সম্পাদনা]

১৯৫৮ সালে প্রথমবারের মতো বিদেশে গাড়ি বিক্রি শুরু করে এ কম্পানি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের মধ্য দিয়ে তয়োতা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবশে করে। ২০০৮ খৃস্টাব্দে সারা পৃধিবীর গাড়ি বাজারের ৩২ শতাংশ পয়োটা গাড়ি দখল করতে পেরেছে।

গ্লোবাল প্রডাকশন[সম্পাদনা]

এর পরের বছরই তারা প্রথমবারের মতো জাপানের বাইরে ব্রাজিলে গাড়ির কারখানা স্থাপন করে। এরপর তারা পর্যায়ক্রমে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে জাপানে টয়োটা মোটর কর্পরেশনের নিজস্ব ১২টি কারখানা, ১১টি সাবসিডিয়ারি অ্যাফিলিয়েট কারখানা ছাড়াও বিশ্বের ২৬টি দেশে মোট ৫১টি কারখানা রয়েছে। এগুলোতে গড়ে প্রতি বছর ৫৫ লাখ গাড়ি তৈরি হয়। অর্থাৎ প্রতি ৬ সেকেন্ডে তৈরি হয় একটি করে টয়োটা গাড়ি। ২০০৪ সালের মার্চ নাগাদ বিশ্বব্যাপী এ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এই প্রতিষ্ঠানে মোট ২ লাখ ৬৪ হাজার লোক কর্মরত ছিল।

প্রবৃদ্ধি[সম্পাদনা]

১৯৬৪ সাল নাগাদ প্রতি বছর তয়োতার বার্ষিক গাড়ি বিক্রির পরিমাণ ছিল মাত্র ৪ লাখ ৬৪ হাজার। আর এগুলোর উৎপাদনও ছিল মূলত জাপানের টয়োটা নগরীকে ঘিরে। ২০০৮ খৃস্টাব্দের জুনে টয়োটার বার্ষিক গাড়ি বিক্রির পরিমাণ পৌছায় ৭৪ লাখে।

বিভিন্ন প্রকার গাড়ি[সম্পাদনা]

টয়োটা শস্তা এবং দামী উভয় প্রকার গাড়ি উৎপাদন করে থাকে। দামী ব্র্যান্ডের মধ্যে অন্যতম হলো লেক্সাস।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা[সম্পাদনা]

যানবাহনের নিরাপত্তাকে দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। এগুলোর একটি হচ্ছে সক্রিয় নিরাপত্তা। এটা নজর দেয় দুর্ঘটনা প্রতিরোধের দিকে। অন্যটি হচ্ছে পরোক্ষ নিরাপত্তা যা সংঘর্ষকালে গাড়ির আরোহীদের রক্ষা করে। এ দুটো ক্ষেত্রেই টয়োটা প্রাগ্রসর প্রযুক্তির রেকর্ডধারী। গাড়ির স্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ বা ভেহিকাল স্ট্যাবিলিটি কন্ট্রোল (VSC)-এর কথা ধরা যাক। এটা গাড়ির চাকার এদিক-ওদিকে ফসকে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে। দূত গতিতে চলার সময় হঠাৎ বাক নিলে কিংবা বরফের ওপর দিয়ে চলার সময় ঘটতে পারে। অথবা সাসটেইনেবল রেসট্রেইন্ট সিস্টেম (SRS)-এর আবরণে ঢাকা এয়ারব্যাগের কথা ভাবা যেতে পারে। দুর্ঘটনার সময় এটা কুশনের মতো আরোহীদের মাথার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জানালার আঘাপ্রণা করতে পারে, সেজন্য এটা তাত্ক্ষণিকভাবে বেলুনের মতো ফুলে ওঠে মাঝখানে কুশনের কাজ করে। বিষয়গুলো নিয়ে টয়োটা আরো অগ্রসর পরিকল্পনা করেছে। তারা ইঞ্জিন, ব্রেক, স্টিয়ারিং এবং অন্যসব নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াকে সমন্বিত করে তৈরি করেছে ভেহিকাল ডায়নামিক ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট (VDIM) সিস্টেম। এর মাধ্যমে গাড়ি সামের্থ্যর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছা পর্যন্ত গাড়িকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় সম্পূর্ণ নতুন এক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উদ্ভাবন করতে যাচ্ছে টয়োটা। সংঘর্ষ পূর্ববর্তী নিরাপত্তা নামে ওই প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হবে ক্যামেরা ও রেডার প্রযুক্তি। এটা সম্ভাব্য দুর্ঘটনার পূর্বাভাস দেবে। এ সিস্টেম সম্ভাব্য পরিণতি ঠেকাতে অথবা সংঘর্ষ এড়াতে চালককে কৌশলী করে তুলবে। কম্পানির নতুন প্রসিডেন্ট কাতসুয়াকি ওয়াতানাবির চিন্তা-ভাবনা অনুয়ায়ী ভবিষ্যতে গাড়িতে হয়তো তন্দ্রা প্রতিরোধক সিস্টেমও উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে। এর ফলে দীর্ঘ ভ্রমণকালে আরোহীর তন্দ্রা ভাব ফেরানো যাবে। এমনকি মদপান করে গাড়ি চালানো প্রতিরোধের পন্থার কথাও ভাবা হচ্ছে। এতে করে এ রকম মাদকাসক্ত কোনো ব্যক্তি গাড়ি চালকের আসনে বসলে গাড়ি চলবে না অথবা নিজ থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে। তয়োতা গাড়ি নিয়ে ওয়াতানাবির ভবিষ্যত্ ভাবনা এখানেই থেমে নেই। তার স্বপ্ন এমন একটি আদর্শ গাড়ি তৈরির যা তার ভাষায়, এটা হবে এমন একটি গাড়ি প্রতিবারই চালানোর সময় তা বায়ু পরিশোধন করবে। আরো উত্সাহী হয়ে তিনি বলেন, এমন একটি গাড়ি যা দুর্ঘটনা ও আঘাতকে একই সঙ্গে প্রতিরোধ করার মধ্য দিয়ে মানসিক চাপ কমিয়ে যাত্রীদের আরো স্বাস্থ্যবান করবে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. TOYOTA: Company > Company Profile
  2. ২.০ ২.১ ২.২ ২.৩ FY2009 Financial Results
  3. TOYOTA: Company > Company Profile