ডিমেনশিয়া কি?
ডিমেনশিয়া মস্তিস্কের এমন একটি বিকৃত অবস্থা যখন কোন কিছু মনে রাখা কঠিন হয়ে যায় অথবা চিন্তার স্বচ্ছতা থাকে না। হরেক রকম পীড়া থেকে ডিমেনশিয়া হতে পারে। এদের মধ্যে প্রধান হলো আলঝেইমার রোগ। চরিত্রগত ভাবে ডিমেনশিয়া একটি সততঃ বর্ধিঞ্চু ক্ষয় জনিত রোগ যা মানুষের স্মৃতি, চিন্তা, আচরন ও ভাবাবেগকে প্রভাবিত করে। এখানে প্রধানতঃ যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলোঃ
- স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া।
- কিছু বলতে গিয়ে সঠিক শব্দ খুঁজে না পাওয়া বা অন্যের কথা বুঝতে অসুবিধা হওয়া।
- নিত্যকর্ম বা গতানুগতিক কাজসমুহ করতে না পারা বা আগে সুষ্টুভাবে যেসব কাজ করতেন সেসব করতে অসুবিধা বোধ করা।
- ব্যক্তিত্ব ও মেজাজের পরিবর্তন ঘটা ।
ডিমেনশিয়ার কোন সামাজিক, অর্থনৈতিক, জাতীয়, বা ভৌগোলিক পরিসীমা নেই। ব্যক্তি বিশেষে ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক রূপ ভিন্ন হলেও সর্বশেষ অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তিগণ নিজের শারীরিক যত্ন নিজেরা করতে পারেন না এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীল হয়ে পরেন। পায়খানা-প্রস্রাব সহ সকল কাজে অন্যের সাহায্য প্রয়োজন হয়। এখন পর্যন্ত অধিকাংশ ডিমেনশিয়ার ক্ষেত্রে রোগমুক্তির কোন ব্যবস্থা নেই তবে চিকিৎসা, পরামর্শ ও সহায়তা পাওয়া যায়।
বিশ্বব্যাপী আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির ফলে বয়স্ক লোকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সেইসাথে ডিমনেশিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
বিশ্বে প্রতি ৩ সেকেন্ডে একজন করে মানুষ নতুনভাবে ডিমনেশিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশ্বে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ জাতীয় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৮০ লক্ষ। ২০৩০ সালে এই সংখ্যা দাঁড়াবে ৭ কোটি ৬০ লক্ষ। ২০৫০ সালে ১৩ কোটি ৫০ লাখেরও বেশী ।
ডিমনেশিয়া গোটা বিশ্বের সমস্যা। বর্তমানে বিশ্বের মোট ডিমনেশিয়া রোগীর ৬২ শতাংশই নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে বাস করে। আর ২০৫০ সাল নগাদ তা বেড়ে ৬৮ শতাংশে দাঁড়াবে বলে আশংকা করা হচ্ছে এবং এর মূল কারণ হচ্ছে এ সব দেশের জনগণ দ্রুত বৃদ্ধ হয়ে যায় ।