জেলা প্রশাসন
left_menu_pic
Joomla Slide Menu by DART Creations
left_menu_footer
ভাষা ও সংস্কৃতি

----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

ভাষা সংস্কৃতি

---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

ভাষা

 

 

সুনামগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার সঙ্গে প্রাচীন চর্যাপদের ভাষার মিল পরিলক্ষিত হয়অন্য অঞ্চলের সঙ্গেও এমন দাবী যুক্তিযুক্তঅন্তত বিশেষজ্ঞদের অভিমত এমনটিই পন্ডিত সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, চর্যাপদের ভাষা পশ্চিমবঙ্গের উপভাষাড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে এটি প্রাচীন বঙ্গকামরূপী ভাষাআবার কেউ কেউ বলেন প্রাচীন বাংলা ভাষার নিদর্শন মাত্রআমাদের অভিমত হলো, বাংলা ভাষাসহ উড়িয়া, অসমীয়া, মৈথিলী ইত্যাদি ভাষা ও বাংলা ভাষার উপভাষা বা আঞ্চলিক ভাষাগুলোর সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে চর্যাপদের ভাষার মিল ছিল সুদূর কিংবা অদূর অতীতে, কিন্তু আজ আর নেইসে ক্ষেত্রে কেবল ব্যতিক্রম সুনামগঞ্জসহ নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জের- বলা ভাল প্রাচীন লাউড় রাজ্যের- আঞ্চলিক ভাষাব্যতিক্রমী প্রাচীন লাউড় রাজ্যের ভাষা ব্যতীত অন্যান্য উপভাষাগুলো দ্রুত পরিবর্তনের মাধ্যমে চর্যাপদের ভাষার সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রকে সম্পূর্ণভাবে ছিন্ন করেছেপ্রাচীন লাউড় রাজ্য ও তার আশপাশের কিছু এলাকার- বর্তমানের ভাটি বাংলা যাকে বলে- ভাষা আশ্চর্যরকমভাবে পরিবর্তনের দিক থেকে শ্লথগতিসম্পন্ন বিধায় চর্যাপদের ভাষার সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রটি আজও অক্ষুন্ন আছেএই কারণেই সুনামগঞ্জের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় চর্যাপদকর্তাগণের উল্লেখযোগ্য অংশের বসবাস ছিল এবং তাঁদের উত্তরসূরীর মানসপুত্র অথবা ভাবশিষ্য অসংখ্য বৈষ্ণব-বাউলেরা এখনও এখানকার প্রকৃতি ও সমাজ-সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে বিরাজ করেনবাংলাদেশের অন্যত্র এমনটি বিরল দৃশ্যআহমদ শরীফ যখন বলেন, ‘‘চর্যাপদের দেশেই বৈষ্ণব-বাউলের উদ্ভব, তখন মনে হয় চর্যাপদের দেশ বলতে সুনামগঞ্জকেই বুঝানো হয়েছে


সুনামগঞ্জ জেলার জনগণ সাধারণত বাংলা ভাষায় কথা বলেনতবে জগন্নাথপুর, ছাতক, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় জনগণ নিজেদের মধ্যে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেঅন্যান্য উপজেলায় বিভিন্ন অঞ্চল যেমন সিলেট অঞ্চল, ময়মনসিংহ অঞ্চল, কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে



সুনামগঞ্জ জেলার অধিবাসীরা সাহিত্য চর্চায় সিলেট বিভাগের পথিকৃৎ, এটা অত্যুক্তি নয়শুধু বাংলা ভাষাতেই নয় এ জেলার অধিবাসীরা মোট সাতটি বিভিন্ন ভাষায় সাহিত্য চর্চার ঐতিহ্য রেখেছেনএটিও এ জেলার অন্যতম রেকর্ড বলে মনে করিপনের’শ শতাব্দি থেকে শুরু এ যাবৎ সুনামগঞ্জবাসীরা যে সমস্ত ভাষায় সাহিত্য রচনা করে গেছেন, সেগুলো হলো-(১) সংস্কৃত (২) বাংলা (৩) সিলেটি নাগরী (৪) আরবী (৫) ফার্সী (৬) উর্দু ও (৭) ইংরেজি

-----------

 

 

সংস্কৃতি: উপরে


অসংখ্য হাওর-বাওর, নদীনালা, খালবিলে পরিবেষ্টিত জনপদ সুনামগঞ্জ জনপদে ঐতিহ্য সংস্কৃতি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের সরব উপাদান আউল-বাউলের চারণভূমি সুনামগঞ্জ তাঁর ঐতিহ্যের ধারা থেকে আজও বিচ্যুত হয়নি লোকসাহিত্যে মহাভারতের অনুবাদক মহাকবি সঞ্চয় (পঞ্চদশ শতক), কুবের আচার্য্য, ঈশান নাগর (বৈষ্ণব কবি)দিব্য সিংহ (লাউর রাজ্যের স্বাধীন রাজা)থেকে শুরু করে সৈয়দ শাহনূর, সৈয়দ হোসেন আলম, রাধারমণ, হাছনরাজা, দুবর্বীণ শাহ, কালাশাহ, ছাবাল শাহ, এলাহী বক্স মুন্সী, শাহ আছদ আলী, পীর মজির উদ্দিন, আফজল শাহ, শাহ আবদুল করিম মাটির সন্তান আধুনিক সাহিত্যে, গল্প-উপন্যাসে শাহেদ আলী, ঝর্ণাদাস পুরকায়স্থ, কবিতায় প্রজেশ কুমার রায়, মুতাসিম আলী, মোহাম্মদ সাদিক, আশরাফ আহমদ, ইকবাল কাগজী, মমিনুল মউজদীন, শামীম লুৎফার, গীতসাহিত্যে মনিরুজ্জামান মনির, দেওয়ান মহসিন রাজা চৌধুরী, সঙ্গীতে উজির মিয়া, নির্মলেন্দু চৌধুরী, এমরান আলী, শফিকুন্নর নুর, সাবিবর আহমদ সোহেল, নাটকে তরনী কান্ত দে, মোদাবিবর আলী টুনু, শাহ আবু তাহের, সদ্যপ্রয়াত গোলাম ববানী, শিল্পকর্মে ধ্রুবএষ, সাংবাদিকতায় ফজলুল হক সেলবর্ষী, মকবুল হোসেন চৌধূরী, মুনাওর আলী, ইছাক আলী, হাসান শাহরিয়ার, সাকির আহমদ,শিক্ষায় মোহাম্মদ আলী, আব্দুল মন্নান চৌধুরী, আলী ফরিদ আহমদ, আব্দুল কাইযূম, সমাজসেবায় হাজী মকবুল হোসেন পুরকায়স্থ, সতীশ চন্দ্র রায়, দিগেন্দ্র চন্দ্র বর্মন, ক্রীড়ায় সমশের আলী, আছদ্দর আলী ভূইয়া, কন্টর মিযা, নাজির আহমদ চৌধুরী উল্লেখযোগ্য

 

সহিত্যে সংস্কৃতি ইতিহাস জনপদকে ঐশ্বিমন্ডিত করে রেখেছে অসংখ্য শিল্পী জনপদে প্রকৃতিগতভাবে বেড়ে ওঠেছেন পরিবেশ প্রকৃতি আপনমনে সাজিয়েছে শিল্পসংস্কৃতি অঙ্গন জনপদের লোকেরাই অনায়াসে গলায় তুলে নিতে পারে গান তারুণ্যের উদ্দীপনায় বা বয়সের কারণে কলম হাতে লিখতে পারে বাউলগান বা কবিতা শিল্পসংস্কৃতির চর্চা ছাড়া বসে থাকতে নারাজ অনেকই গান বা নাটক বা যাত্রা যে যাই করুক তাতে শ্রোতাদের উপস্থিতি লক্ষণীয় ব্যাপার


জনপদের আয়তন দেশের তুলনায় নিতান্ত অল্প-সল্প হলেও শিল্প_সংস্কৃতির ইতিহাসের বিশালায়তনে অল্প নয় শিল্প-সংস্কৃতির বিশাল অঙ্গন জুড়ে রযেছে বৈচিত্রময়তা শিল্প-সংস্কৃতির ধারাগুলো অকৃত্রিম সহজাত শাশ্বত ঐতিহ্যের প্রতীক মাটির অমনি ধারা যে, অঞ্চলের অধিবাসী আপনা হতেই কোমল ভাবুক প্রাণ সৃজনপিয়াসী যে কারণে এখানকার শিল্পসংস্কৃতির জগতে রযেছে নমনীয়তার ছোঁয়া শিল্পসংস্কৃতির লোকজীবনসম্ভুত তারই মধ্যে এমন শক্তি আছে যার দ্বারা অনায়াসে চলমান কালের নবীনতাকে গ্রহণ করে আত্মসম্প্রসারণ করতে পারে যুগ পরিবর্তনের ধারায় শিল্পসংস্কৃতি মূলত গ্রামকেন্দ্রিক, গ্রামীন জনপদের লোকজনই শিল্প-সংস্কৃতির লালন-পালনকারী নাগরিক জীবনে যে শিল্পী সংস্কৃতির পরিচয় পাওয়া যায় তা ঐতিহ্যছুট আধুনিকতার ক্ষীণ প্রতিফলন লক্ষ্য করা গেলেও এর আমেজের স্থায়ীত্ব নেই বললে চলে

 

 

----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

ভাষা সংস্কৃতি

----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------