ফজলুল ইসলাম
নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও মুখ খুলছেন না দেশের মহিলা ক্রিকেটাররা। খুলনার ক্রিকেটার সালমা আকতার, রাজশাহীর পান্না ঘোষ, চট্টগ্রামের চম্পা চাকমা- এ নিয়ে কেউ স্পষ্ট কথা বলতে রাজি নন। তাদের সাফ কথা, 'এ বিষয়ে খোলাখুলি কথা বললে সমস্যা আছে। ক্রিকেট বোর্ড আমাদের বলেছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অনুমতি লাগবে।' বিসিবির নিষেধাজ্ঞায় মুখে কলুপ এঁটেছেন তারা। তবে কথাবার্তায় চাপা ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।
এদিকে অভিযোগ আছে, কোনো একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলেও চুক্তির আওতায় এসেছেন ফারজানা হক পিংকি ও ফাতেমা তুজ জোহরা। অন্যদিকে একাধিক জাতীয় দলের হয়ে একাধিক ম্যাচ খেললেও চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি শামীমা আক্তার পিংকি। ফারজানা গ্রেড-২ এর আওতায় ও ফাতেমা গ্রেড-৩ এর আওতায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
নানা আলোচনা-সমালোচনা পেরিয়ে গত ২৫ মার্চ ১২ জন মহিলা ক্রিকেটারকে এক বছরের জন্য চুক্তির আওতায় আনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। গ্রেড-১ এর আওতায় ক্রিকেটাররা পাবেন ১০ হাজার টাকা। গ্রেড-২ এ থাকা ক্রিকেটাররা পাবেন ৮ হাজার টাকা। গ্রেড-৩ এ থাকা ক্রিকেটাররা পাবেন ৬ হাজার টাকা। পারফরমেন্সের নিরিখে গ্রেড-১ এ থাকা ক্রিকেটাররা হলেন সালমা খাতুন, সাথীরা জাকির জেসি, আয়েশা আকতার, পান্না ঘোষ। গ্রেড-২ এ রয়েছেন শুকতারা রহমান, চম্পা চাকমা, ফারজানা হক পিংকি ও লতা ম-ল। রুমানা আহমেদ, সোহেলি আকতার. ফাতেমা তুজ জোহরা, তিথি রানী সরকার রয়েছেন গ্রেড-৩ এ।
চুক্তির আওতায় এলেও নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে অসন্তোষ আছে অনেক মহিলা ক্রিকেটারের। খুলনার ক্রিকেটার সালমা আকতার বলেছেন, 'ভাই অনেক কিছু বলার আছে। বেতনের আওতায় এসেছি। শুনতে ভালোও লাগছে। কিন্তু এর বিপরীত চিত্রও আছে। এসব বললে সমস্যা আছে। বোর্ড বলছে কথা বলতে হলে অনুমতি লাগবে। যেহেতু চুক্তির আওতায় এসেছি, এ জন্য অনেক কথা বলতে চাইলেও বলতে পারছি না।'
পান্না ঘোষ বলেছেন, 'এত কম টাকায় এ সময়ে হাত খরচ চালানো দায়। ৮-১০ হাজার টাকা দিয়ে কি হয়? তাছাড়া এক বছরের জন্য। স্থায়ী চুক্তি হলে ভালো হতো। এখানে অনেকে আছেন, যাদের যোগ্যতা কম তাদের বেশি বেতন ধরা হয়েছে। যাদের যোগ্যতা বেশি, তাদের কম বেতন ধরা হয়েছে।' যোগ করেন, 'কথা বলতে বোর্ডের নিষেধাজ্ঞা আছে। অন্যথায় নাম ধরে বলতাম কাদের যোগ্যতা কম। যেহেতু চুক্তির মধ্যে আছি, এজন্য বলতে চাচ্ছি না।'
চট্টগ্রামের চম্পা চাকমা বলেছেন, 'গত এক বছর আমার পারফরমেন্স আপনারাই মূল্যায়ন করুন। যারা এ গ্রেডের আওতায় তাদের চেয়ে আমি কোনো অংশে কম নয়। অথচ আমাকে বি গেডে রাখা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মানা যায় না।' যোগ করেন, 'নতুন চুক্তি হওয়ার পর বোর্ড থেকে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলতে। এই যে কিছু একটা বলে ফেললাম, তাতেও সমস্যা হতে পারে।'
এ ব্যাপারে বিসিবির ওমেন্স উইং কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল ফুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, তিনি এখন দেশের বাইরে আছেন।