কি ঝরাবো কুরবানীতে পশুর তাজা রক্ত আর
বিশ্বজুড়ে মুসলমানের রক্তঝরা নিত্যকার,
হৃদয় জুড়ে বইছে তুফান কি আনন্দ ঈদে
হাসতে গেলে হৃদয় মাঝে আর্তনাদই বিঁধে!
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।.
|
|||||||||||
104 captures
20 Aug 2008 - 17 May 2019
|
|
The seed for this crawl was a list of every host in the Wayback Machine
This crawl was run at a level 1 (URLs including their embeds, plus the URLs of all outbound links including their embeds)
The WARC files associated with this crawl are not currently available to the general public.
শেকড়ই শক্তি
কি ঝরাবো কুরবানীতে পশুর তাজা রক্ত আর
বিশ্বজুড়ে মুসলমানের রক্তঝরা নিত্যকার,
হৃদয় জুড়ে বইছে তুফান কি আনন্দ ঈদে
হাসতে গেলে হৃদয় মাঝে আর্তনাদই বিঁধে!
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।.
মেয়েটার ক্ষতির কোন চিন্তাই মাথায় এলো না; বরং সন্তানের মাকে নিয়ে ছিল সবটুকু ভয়। বার বার এমন সব সমস্যার কথা জেনেছি যে, নিজেও শংকিত হয়ে পড়েছিলাম। অপারেশন থিয়েটারে যাবার প্রাক্কালে এমন ভাবে বিদায় নিচ্ছিলো যেন এই বুঝি শেষ দেখা। মনটা আরো ছোট হয়ে পড়েছিল। দারুন উৎকণ্ঠায় প্রতিটি মুহূর্ত যেন দীর্ঘ প্রহর। কিন্তু দেখলাম, চিন্তায়, ক্লান্তিতে অথবা আল্লাহর রহমতে অজান্তেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কিছুটা সময় মাত্র, তবুও মাথাটা হালকা হলো যেন।
অপেক্ষা করছিলাম, কখন ডাকবে। ডাক এলো, ভেতরে গেলাম, শিশুদের জন্মোপরের প্রাথমিক অবস্থা রিপোর্ট করার বাংলাদেশী ডাক্তার জানালেন, বাচ্চার অবস্থা ভালো না। তবে বাচ্চার মা ভালো আছেন। তখনো মনে স্থান দেইনি, অনুমতি নিয়ে কানে আযান শোনালাম। জানিনা, মা আমার শব্দ শুনতে পেয়েছিল কি না। নিদারুন এক হেঁচকি তাকে যেন সংজ্ঞাহীন করে রেখেছিল তাকে। তবুও আশাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আনন্দিত হবার চেষ্টা করলাম। না! ডাক্তার আমাকে আতংকের কথা শোনাতে লাগলেন। ধীরে ধীরে পায়ের তলার মাটিও যেন নরম হতে থাকলো। আমি দেয়াল ধরে নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করতে থাকলাম।
তারপর অনেক, অনেক দীর্ঘ আটটি দিন কেটে গেল। ডাক্তারের ডাক এলো, মেয়ে আমার তার মায়ের কোলে এলো, হাসপাতালের বিভিন্ন নিয়মনীতির কাগজপত্র এলো, আমার মেয়েটি আমারও কোলে এলো, তবে বরফ-শক্ত তার দেহ! সাদা কাফনে মোড়ানো তার সাজ! চিরদিনের জন্যই এলো আর চলে গেলো হৃদয়ের একটি অতি আকাংখিত অংশ। আমি খালি হাতেই ফিরে এলাম আমার সাজানো(?) নীড়ে।
ভূমিকার স্মৃতিগুলো টানলাম যার কারণে, সে আমার বড় মেয়ে। পাঁচ ছেড়ে ছয়-এর মাঝামাঝিতে চলছে মাত্র। চিন্তাগুলো দারুন সরল। প্রশ্নগুলোও তদ্রূপ। সম্পর্কে হিসাব-নিকাষও আকর্ষনীয় সরল। আপনি তার জন্য যা নিয়ে আসবেন, সে অনুযায়ী ‘মামা’ বা ‘দাদা/নানা’ যুক্ত হয়ে তার সাথে সম্পর্কিত হবেন। যেমন, কেউ চকলেটমামা, কেউ ফুলমামা, কেউবা বিমানআন্টি আবার কেউ কেউ অবশ্য কালানানা, কালাদাদা ইত্যাদি নামও পেয়েছেন।
হৃদয়ের যে অংশটিকে চিরতরে মাটিচাপা দিয়ে আসতে হয়েছিল, তাকে যখন তার বোনের সামনে এনেছিলাম, সে জানতে চাইলো: আপু উঠেনা কেন? সবাই বললো: সে ঘুমাচ্ছে। এখন বড় মেয়ের বয়স সাত ছুঁই ছুঁই করলেও এখনো বাকী কবরস্থানের পাশ দিয়ে বাবার গাড়ীতে চড়ে যাওয়ার সময় নিয়মিত তার আপুর জন্য কবরের দো’আ পড়ে। হাত নেড়ে নাম ধরে বিদায় জানায়। ব্যস্ততায় আমরা ভুলে গেলেও সে কখনোই ভোলেনি। মাঝে মাঝে স্বগতঃই বলে, সেদিন (যেদিন আমরা তাকে তার আপুকে দেখিয়েছিলাম) যদি আপুকে জোরে জোরে ডেকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিতে পারতাম, তাহলে এখন আপু আমাদের সাথে থাকতো।
কখনো বলে: বাবা, আপুকে নিয়ে আসো না কেন? চল, আমিসহ গিয়ে কবর ভেঙ্গে নিয়ে আসি। তারপর আর কখনো যেতে দেব না।
জামাকাপড় কিনলে দু’একটি তার আপুর জন্য রেখে দিতে চায়। আমরা জোর করে নিরস্ত করি।তার মাকে বলে: আম্মু, আপুর জন্য যে জামা কিনেছো তা তুলে রাখো, কাউকে দিবে না।
এভাবেই চলে যায় দিন, মাঝে মাঝে দারুন অসহায় হয়ে পড়ি তার প্রশ্নবানে। কেবলি মনে হয়-
শিশুদের নিষ্পাপ-সরল প্রশ্নগুলোই বোধহয় পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন!
যারা মিথ্যা বলতে পারি, তারা মিথ্যা দিয়েই বুঝিয়ে দেই।
যারা এড়িয়ে যেতে চাই, তারা ধমক দিয়ে থামিয়ে দেই।
আর যারা দু’টোর কোনটাই পারি না, তারা অতি দুর্বল, আয়তনে ক্ষুদ্র এবং তাদেরই লালিতদের নিকট দারুন অসহায় হয়ে পড়ি।
৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।.
পৃথিবীর পথে চলতে গিয়ে বুঝতে পারিনি বহুদিন
কোথায় আমি?
দেখেছি আমার চিৎকারে তটস্থ পরিজন
হাত-পা ছুঁড়ি তো যথেষ্ট জায়গা করে দেয় সকলে
আমার ক্ষুধা-তৃষ্ণা অনুভবের আগেই নিবারিত হতো
আদরে, সোহাগে, ভালবাসায়, স্বাধীনতার আধিক্যে
রঙিন ময়ুরের পেখম হয়ে উঠেছিল জীবনের ধারা…
ধীরে ধীরে জ্ঞানের দানা চিবিয়ে চিবিয়ে
ময়ুর আমার শৃংখলিত হতে শুরু করে
পারিবারিক নিয়ম, সামাজিক দায়বদ্ধতা
রাষ্ট্রীয় আইন-কানুন, ধর্মীয় বিধি-নিষেধ
পক্কতায় এসে জ্ঞানের হাল ধরেও বুঝলাম
সত্য বিধানের অধীনতাই প্রকৃত স্বাধীনতা…
হায়! যদি তাই হতো, যদি তাতেই দৃঢ়তা পেতাম
পৃথিবী যেন আমার শৃংখলিত বন্দী আহত ময়ুর
উশৃংখল নিয়ম ভাঙ্গার তুফানে রঙিন পালকে তাণ্ডব…
যুগের ষণ্ডাদের দেখেছে পৃথিবী, সূচনার পরে
নূহের যুগে, ইবরাহীম, মুসা, ঈসা, মুহাম্মাদের(স) যুগে
তারপরে, তারপরে, তারও অনেক পরে, এভাবেই বর্তমানে
দেখেছে আপন ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত হতে
মানুষের লাশের সারি বিছিয়ে দিতে
খুলির সৌধ সাজাতে, রক্তের বন্যা বইয়ে দিতে
দেখেছে মানবের আগমন পথে পাশবিকতার শেষটুকু
দেখেছে ঝাঁঝরা হওয়া শিশুদের তুলতুলে দেহ
আশ্রয় শিবিরে ক্ষুধিতের কান্নার রোল, দীর্ঘশ্বাস
বিচারিক প্রহসনে হত্যার জাতীয় উৎসব
রাতের অন্ধকারে মৃত্যুতে মৃত্যুতে ক্ষমতার অবসান
কবরেও মৃতদের নিরাপত্তা নেই, চুরি অথবা রাজনীতিতে
পৃথিবীর বুকের ভেতর তাই বুঝি অথৈ আগুন…
জগৎ পরিভ্রমণে বেরিয়েছিলাম বিধাতার নির্দেশে
সে-ই ক’বে, শৈশবে
এতদিন পরে মনে হয়, পৃথিবী যেন এক-
‘কালের খাঁচায় বন্দি ময়ুর’।
১৭ আগষ্ট ২০১৫, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।.
দীর্ঘ মাসের কঠোর সাধনা শেষে
ঈদ-আনন্দে মুসলিম উঠে হেসে,
কবূল করো সিয়াম, ক্কিয়াম, ত্যাগ
হে দয়াময়, রাজি হও ভালবেসে।
-হোটেল খোজামা, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।.
জগৎ জুড়ে ধীরে ধীরে
যায় নিভে যায় দিনের আলো,
দিন-বিদায়ের এই লগনে
মাগরিবটা অনেক ভালো।
১৪ জুন ২০১৫, হোটেল খোজামা, মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।.
S | S | M | T | W | T | F |
---|---|---|---|---|---|---|
« Sep | ||||||
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |