Quantcast
বৃহস্পতিবার ১৩ মে ২০১০
Online Edition
Twitter
Facebook
Sangram RSS
Our videos
Weather

প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ খবর মেইলে পেতে চাইলে গ্রাহক হোন -

Delivered by
FeedBurner

| পড়া হয়েছে: ১৬৩ বার | মন্তব্য টি

মূলপাতা » শেষের পাতা

খুলনা থেকেই বীজ গেছে ২১ জেলায়

প্রথমবার চাষেই আশাতীত ফলন\ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে সুগন্ধি ধান বাংলামতি

খুলনা অফিস : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বোরো মওসুমে চাষ উপযোগী প্রথম সুপার এ্যারোমেটিক রাইস বাসমতি সদৃশ্য বাংলামতি ধান কৃষকের ভাগ্য ফেরাতে পারে-এমনটি আশা করছেন ব্রি'র সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এবং মাঠ পর্যায়ে প্রথম চাষকারী কৃষকবৃন্দ। মাঠ পর্যায়ে প্রথমবার চাষে এবছর আশাতীত ফলন ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ায় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন-বিএডিসির হাতে বীজ পৌঁছানোর আগেই কৃষক পর্যায়ে সংরক্ষিত বীজ সংশ্লিষ্ট এলাকা ছাড়াও সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে । কেবল খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মেছাঘোনা গ্রামের যে কৃষকের জমিতে এবার বোরো মওসুমে বাংলামতি ধানের চাষ করা হয় সেখান থেকে এ পর্যন্ত দেশের ২১ জেলার কমপক্ষে ২শ' আগ্রহী চাষী, বিভিন্ন পেশাজীবী ও সৌখিন ব্যক্তি বীজ সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গত মওসুমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক মাঠ পর্যায়ে যশোরে পরীক্ষামূলকভাবে চাষের পর এবার ব্যক্তি আগ্রহে দেশে যশোরের বাইরে মাত্র ১০/১২ জন কৃষক এধানের চাষ করেছেন । যার প্রায় সবই পদ্মার দক্ষিণ পারে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সব চাষীর ধান ইতোমধ্যে কর্তন ও মাড়াই শেষ হয়েছে। ব্রি'র ইw≈ত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬ মেঃটন ছাড়িয়ে গড় উৎপাদন ৭ টনে পৌঁছেছে যা খুবই আশাব্যঞ্জ্যক বলে মনে করেন কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। কয়েক জায়গায় উৎপাদন ৮ টনে পৌঁছেছে। ভারত ও পকিস্তানের বাসমতির সর্বোচ্চ একর প্রতি ফলন ৩০-৪০ মণ। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাংলামতির উৎপাদন একরে ৭০-৮০ মণ পর্যন্ত পাওয়া যাবে । ফলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের তুলনায় কমদামে চাল বিক্রি করলেও বেশী লাভবান হবে আমাদের দেশের কৃষককরা । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের দেরাদুন বাসমতি বা পাকিস্তানের বাসমতি চালের প্রতি কেজি বিক্রিমূল্য তিন ডলার যা বাংলাদেশী টাকার মানে দুইশত টাকার উপরে। বাংলাদেশ বছরে যদি ৪০-৫০ হাজার মেঃটন বাংলামতির চাল রফতানি করতে পারে তবে এক হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে । আর এই ৫০ হাজার মেঃটন চাল রফতানিতে যে ঘাটতি হবে তা আউশ মওসুমে ধান চাষ সম্প্রসারণ করে মেটানো সম্ভব ।
ব্রি'র জেনেটিকস রিসার্চ ডিভিশনের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খায়রুল বাসার জানান, ১৯৭৬ সালে আমন মওসুমে চাষ উপযোগী সুগন্ধী ধান দুলাভোগ বা ব্রি-৬ উৎপাদনের দীর্ঘদিন পর আমন মওসুমে চাষ উপযোগী সুপার এ্যারোমেটিক রাইস হিসেবে আমরা বাংলামতি উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছি। এধান বাসমতির প্রতিদ্বনদ্বী হতে পারে ।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পংকজ কান্তি মজুমদার বলেন, আমি নিজে উপস্থিত থেকে নমুনা শস্য কর্তন করে অভিভুত হয়েছি ফলন দেখে। বাংলামতি চিকন ও সুগন্ধি ধান হওয়া সত্ত্বেও এর ফলন ব্রি-২৮ এর উপরে। ফলে এই ধান কৃষক আগ্রহের সাথে গ্রহণ করবে এবং এর চাষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। খুলনাঞ্চলে বাংলামতি ধানের চাষ প্রবর্তক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের উপরিচালক এসএম আতিয়ার রহমান জানান, তার পৈত্রিক জমিতে চাষ করে এবছর ফলন পাওয়া গেছে একরে ৭২ মণ যা হেক্টর প্রতি ৭ মেঃটন। তিনি জানান পত্রপত্রিকায় এবং ইলেট্রনিক মিডিয়ায় খবর প্রকাশের পর এপর্যন্ত তাদের বাড়ি থেকে বগুড়া, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁ, শেরপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ঢাকা, মানিকগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, মুন্সিগঞ্জ, পিরোজপুর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, নড়াইল, ফরিদপুর থেকে এসে অথবা ফোনে যোগাযোগ করে কুরিয়ারের মাধ্যমে বীজ সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া এলাকায় প্রচুর চাহিদা থাকলেও বীজ যা আছে তাতে কুলাবে না । এজন্য রেশনিং করে বীজ দিতে হচ্ছে । তিনি আরও জানান, বাংলামতি মূলত বোরো মওসুমে আবাদের জন্য অনুমোদিত হলেও অনেকে আউশ মওসুমেও চাষ শুরু করেছেন। তিনি আরও জানান, তাদের নিকট থেকে যারা বীজ সংগ্রহ করেছেন তাদের বেশীরভাগই শিক্ষিত কৃষক,নানান পেশাজীবী এবং সৌখিন ব্যক্তি। যারা নতুন প্রযুক্তি বা নতুন উদ্ভাবনার প্রতি আগ্রহী।