(উৎসর্গ: বাংলাদেশের ইসলামী সংস্কৃতির অগ্রনায়ক মরহুম কবি, গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী মতিউর রহমান মল্লিক।)

টিক্, টিক্,, টিক্,,,
থেমে যায় ঘড়িটি চিরদিনের জন্য
কখনো আর শুনতে পাবোনা ঘন্টার ধ্বনি
ঘড়িটি থেমে যায় অজানা হিসেব গুনি।

কত কাজে লেগেছিল সম্মিলিত মানুষের জীবনে
ঘড়িটির টিক্ টিক্ ধ্বনি কাঁপন তুলেছিল বঙ্গবিশ্বে
পদ্মা-মেঘনা-কর্ণফুলীতে এনেছিল সুর-ছন্দের জোয়ার
যমুনার অববাহিকায় আছড়ে পড়েছিল ঢেউ টিক্ টিক্,
তারপর মিসিসিপি টেমস্ হয়ে লোহিত-আরব সাগরেরে তটে।
প্রাচ্য-প্রাশ্চাত্য-মধ্যপ্রাচ্যের পথে প্রান্তরে যারাই ছিল ধারক
পৃথিবীর অন্যতম ভাষা বাংলার, ভাব-এ, সুরে এবং কথায়
তাদের জীবনে, সংস্কৃতিতে, পাওয়ায়, না পাওয়ায়, স্বপ্নে;
চলেছিল অগ্র পথে তারা ঘড়িটির প্রতিটি কাঁটার পরিবর্তনের সাথে।
সুরেও সত্য থাকে; একথা যেন বিশ্বাসের বাইরে ছিল
সত্যের সুরেও যে আনন্দ থাকে, ঝংকার তোলে মনের মোহনায়
জেনেছিল তারা ঘড়িটির জীবনের ঘন্টা-ধ্বনির সুরে সুরে।
সুরের ছন্দে ঝরে পড়েছিল আদর্শের বারি ধারা
ছন্দের তালে তালে নেচে উঠতো বিশ্বাসীর মন ও প্রাণ
বাজতে বাজতে বাজাতে বাজাতে জীবন ফুরিয়ে এলো,
আমাদের সময়জ্ঞান বিলাতে বিলাতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় হৃদয়!
জানতো, তবু জানিয়ে গেল সুরে সুরে, ছন্দে ছন্দে-
“টিক্ টিক্ টিক্ টিক্ যে ঘড়িটা বাজে ঠিক্ ঠিক্ বাজে
কেউ কি জানে সেই ঘড়িটা লাগবে কয়দিন কাজে…!”

ঘড়িটি নষ্ট হয়ে গেল….
সারিয়ে তুলতে পারেনি কেউ, কেউই….
শুনলাম, সবাই মিলে ঘড়িটিকে লুকিয়ে রেখেছে
মিরপুরের কালশীতে, চিরতরে, চিরদিনের জন্য
ঘড়িটি থেমে যায় চিরদিনের জন্য
টিক্, টিক্,, টিক্,,, তারপর কেবলি নিস্তব্ধতা!

কেবল থেকে গেছে, থেকে যাবে ঘড়ির ঘন্টা-ধ্বনি বাতাসে-ইথারে
হৃদয়ে, কাগজে, ফিতায়, আন্তর্জালে, সংগ্রামে, আদর্শে ও ভালবাসায়।

১২ আগষ্ট ২০১০
মদীনা মুনাওয়ারা, সউদি আরব।.