শিরোনাম:

• ২য় ওয়ানডে : শ্রীলঙ্কা ২৭৯/৬ রান (৪৬ ওভার), বিপক্ষ ভারত ৩০১    • আগামী সোমবার অলিখিত ফাইনালে মুখোমুখি আবাহনী-মোহামেডান   • মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে জামায়াতের দাঁড়ানো কি দোষের?   • বিদেশগামী শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধে যত্নবান হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির   • ৩ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ চালু   • অস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী জেনিফার জোনস আর নেই   • লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেতা হচ্ছেন সুষমা স্বরাজ   •  জাতীয় পার্টির নেতা মাওলানা সাখাওয়াত কারাগারে    • জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে প্রতারণা করছে উন্নত দেশগুলো   • জারদারি ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের গুজব নাকচ  

ব্রুস লির মেয়ে যা চান

শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া | তারিখ: ১৮-১২-২০০৯

  • ০ মন্তব্য
  • প্রিন্ট
  • Share on Facebook
বাবার স্মৃতি চিরস্মরণীয় করে রাখতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন ব্রুস লির মেয়ে

বাবার স্মৃতি চিরস্মরণীয় করে রাখতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন ব্রুস লির মেয়ে

আজ থেকে প্রায় চার দশক আগে মারা গেছেন মার্শাল আর্ট তারকা ব্রুস লি। তারকা আসনে তাঁর দ্যুতিময় ভাবমূর্তি আজও অম্লান। মার্শাল আর্টকে উপজীব্য করে নির্মিত তাঁর সেই ছবিগুলো আজও চুটিয়ে ব্যবসা করছে। ব্রুস লির এই খ্যাতিকে আরও উজ্জ্বল করে ধরে রাখতে চান তাঁর মেয়ে শ্যানন লি। এ নিয়ে এখন চলছে তাঁর জোর চেষ্টা।
জীবনাবসানের পর খ্যাতিমান ব্যক্তিদের বিত্তের পাহাড় রেখে যাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। বিশ্বখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন মারা গেছেন সেই ১৯৫৫ সালে, অথচ এখনো উত্তরাধিকারীরা তাঁর রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে বছরে এক কোটি ডলার করে পাচ্ছেন। ব্রিটিশ রকতারকা জন লেননের বংশধরেরা প্রয়াত শিল্পীর সম্পদ থেকে বছরে পাচ্ছেন দেড় কোটি ডলার। পপতারকা এলভিস প্রিসলির রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে বার্ষিক আয়ের পরিমাণ সাড়ে পাঁচ কোটি ডলার। প্রয়াত হলিউড তারকা মেরিলিন মনরো ও শিল্পী অ্যান্ডি ওয়ারহলের রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে আয়ের পরিমাণও দাঁড়ায় অনেক।
এসব প্রয়াত তারকার নামে বাজারে পণ্য ছেড়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এ নাম ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে তাঁদের উত্তরাধিকারীরাও পাচ্ছেন দুটো পয়সা। কিন্তু ব্রুস লির মেয়ে শ্যানন লি (৪০) বাবার নাম অকাতরে বেচে পকেট ভারী করতে ইচ্ছুক নন। ১৯৭৩ সালে ৩২ বছর বয়সে মারা যান ব্রুস লি। শ্যাননের বয়স তখন মাত্র চার বছর। কাজেই বাবার স্মৃতি তাঁর কাছে নিছক এক টুকরো ঝাপসা ছায়া। তবে ওই ঝাপসা স্মৃতিই তাঁর বুকের গভীরে শক্ত শেকড় গেড়ে আছে। একসময় অভিনয়ে নেমেছিলেন শ্যানন। এখন ছুটি নিয়েছেন। বাস করছেন লস অ্যাঞ্জেলেসে। তিনি বলেন, ‘বাবার এক টুকরো ঝাপসা স্মৃতিই আমার কাছে অনেক কিছু।’
বাবার প্রতি শ্যাননের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এতই প্রগাঢ় যে, নিজেকে তাঁর রেখে যাওয়া সম্পদের ‘উত্তরাধিকারী’ বলে দাবি করেন না তিনি। এর চেয়ে বরং ‘গাইড’ বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
ব্রুস লির সব সম্পদ মিলিয়ে যে এস্টেট, তার বার্ষিক গড় আয় এখন ২০ লাখ ডলার। এ আয়কে শ্যানন লি ৫০ লাখ ডলারে নিয়ে যেতে চান। তবে তা অবশ্যই সম্মানজনক পথে।
সান ফ্রান্সিসকোতে জন্ম হলেও ব্রুস লি বড় হয়েছেন হংকংয়ে। দারিদ্র্যের মধ্যে কেটেছে তাঁর শৈশব-কৈশোর। পরবর্তী সময়ে তিনি মনপ্রাণ ঢেলে মার্শাল আর্টে তালিম নেন। আত্মরক্ষার এই শিল্পে তিনি যোগ করেন নিজস্ব ধাঁচের কুং ফু কৌশল। এর গুণে আলাদা ভাবমূর্তি গড়ে ওঠে তাঁর। শুরুতে হংকংয়ে তিনটি ছবি নির্মিত হয় তাঁকে নিয়ে। এতে এশিয়ায় সুপারস্টার বনে যান তিনি। পরে হলিউডে তাঁকে নিয়ে তৈরি হয় এন্টার দ্য ড্রাগন। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার এক সপ্তাহ আগে ব্রুস লি মারা যান। এতে অবশ্য তাঁর তারকা-জ্যোতি বিন্দুমাত্র ম্লান হয়নি, বরং আরও উজ্জ্বল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
হংকংয়ে ব্রুস লিকে নিয়ে প্রথম দিকে যেসব ছবি নির্মিত হয়েছে, সেসব ছবির মালিকানা ফরচুন স্টার নামক একটি প্রতিষ্ঠানের। প্রতিষ্ঠানটির বিপণন ব্যবস্থাপক রেবেকা ইয়াউ বলেন, তাঁদের মালিকানাধীন ব্রুস লির ছবিগুলো এখনো খুব ভালো ব্যবসা করছে।
সে তুলনায় ব্রুস লির নিজস্ব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আয় দিন দিন কমে আসছিল। ব্রুস লির স্ত্রী লিন্ডা লি ক্যাল্ডওয়েল এটি পরিচালনা করছিলেন। অবশ্য এই এস্টেট প্রয়াত তারকার নামের গুণেই যা চলছিল। আয় বাড়ানোর কোনো কার্যকর উদ্যোগ তেমন ছিল না। এমনকি ব্রুস লির নামে প্রতিষ্ঠিত ইন্টারনেটের স্বত্বও এই এস্টেটের নয়। বছর দশেক আগে মায়ের কাছ থেকে শ্যানন লি দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর এখন পুরো সম্পত্তি পরিচালনা গতি পেয়েছে।
হংকংয়ে সর্বশেষ যে বাড়িতে ব্রুস লি থেকেছেন, সেটি বিনোদন মোটেল হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছিল। একজন কোটিপতি বাড়িটি কিনে নিয়েছিলেন। কয়েক মাস আগে হংকং নগর কর্তৃপক্ষ বরাবর বাড়িটি দান করা হয়। উদ্দেশ্য মহত্। তিনি চান, বাড়িটি ব্রুস লির স্মৃতিবহনকারী জাদুঘর হিসেবে ব্যবহূত হোক। ওই জাদুঘরের নকশা নিয়ে এখন বিভিন্ন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। সম্প্রতি তা পর্যবেক্ষণে শ্যানন লি হংকংয়ে ঘুরে আসেন। তবে এই প্রকল্প ব্রুস লির নিজস্ব এস্টেটভুক্ত নয়।
এ ব্যাপারে শ্যানন লি বলেন, ‘ব্রুস লি অ্যাকশন মিউজিয়াম নামে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার নিজস্ব পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এটি খুব সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে নির্মাণ করা হবে। ব্রুস লি একসময় সেখানে বাস করতেন। চিরনিদ্রায় তিনি শুয়েও আছেন সেখানে।’ শ্যানন বলেন, ‘ব্রুস লিকে তাঁরা একটি “লাইফস্টাইল” হিসেবে দেখছেন।’
গত অক্টোবরে ব্রুস লিকে নিয়ে শ্যানন নতুন একটি ওয়েবসাইট খুলেছেন। এতে ব্রুস লির কিছু লেখা রয়েছে। রয়েছে স্বত্বাধীন জীবনী। শ্যানন এর মধ্যে ইউনিভার্সাল স্টুডিও থেকে বাবার অনুমতিস্বত্ব ফিরিয়ে নিয়েছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে ওই স্টুডিও এটি ধরে রেখেছিল।
সম্প্রতি চীনে ব্রুস লির জীবনী নিয়ে ৫০ পর্বের ধারাবাহিক প্রচারিত হয়। শ্যাননের প্রতিষ্ঠান থেকে এটি প্রচারের অনুমতি নিয়েছিল চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি। যুক্তরাষ্ট্রে ব্রুস লিকে নিয়ে দুই ঘণ্টার একটি তথ্যচিত্র প্রচারের চুক্তি হয়েছে। হিস্ট্রি চ্যানেলের এই তথ্যচিত্রের নাম হাউ ব্রুস লি চেঞ্জড দ্য ওয়ার্ল্ড।
এভাবে শ্যানন ধাপে ধাপে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছেন, যাতে একই সঙ্গে বাবার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয় এবং তাঁদের এস্টেটের আর্থিক ভিতও মজবুত হয়। সস্তা কোনো পথ ধরে নয়, সম্মানজনক পথেই বাবাকে খ্যাতির উঁচু আসনে ধরে রাখতে চান তিনি। তিনি চান, বাবা ব্রুস লি মিশে যাক মানুষের জীবনধারায়।

পাঠকের মন্তব্য

পাঠকদের নির্বাচিত মন্তব্য প্রতি সোমবার প্রথম আলোর সম্পাদকীয় পাতায় প্রকাশিত হচ্ছে।
আপনার মতামত দিন
old version
শুক্র
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ