kalerkantho

মঙ্গলবার । ২৫ মাঘ ১৪২৮। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২। ৬ রজব ১৪৪৩

চাবির খোঁজে তালাবদ্ধ বগুড়া

   

১৭ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ | পড়া যাবে ১১ মিনিটে



চাবির খোঁজে তালাবদ্ধ বগুড়া

পরিত্যক্ত সুইমিংপুল

'খুব ভালো উইকেট, আউটফিল্ডও চমৎকার'- মুগ্ধ হয়েই লিখেছিলেন তিলকরত্নে দিলশান। লঙ্কান সাবেক অধিনায়কের মতো প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে খেলে যাওয়া বেশির ভাগ বিদেশি ক্রিকেটারের কলমের আঁচড়ে 'ভিজিটার্স' বুকে' ফুটে উঠেছে এমন স্তুতি। অথচ এই স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয় না ২০০৬ সালের পর থেকে। আইসিসিরি নিয়ম অনুযায়ী টানা পাঁচ বছর কোনো স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক খেলা না হলে সেই স্টেডিয়ামকে নতুন করে নিতে হবে আন্তর্জাতিক মর্যাদা।

বিজ্ঞাপন

অর্থাৎ এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মর্যাদা হারিয়েছে বাংলাদেশের সৌভাগ্যের ভেন্যু শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে একটি ফুটবল স্টেডিয়াম থাকলেও নানা জটিলতায় দেড় দশক ধরে সেটা তালাবদ্ধ। তালা লেগেছে তিন কোটি টাকায় নির্মিত সুইমিং পুলটিতেও। জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাগারে ৪০ লাখেরও বেশি টাকা অলস পড়ে আছে, কারণ বিভিন্ন খেলার নিয়মিত প্রশিক্ষণও যে বন্ধ! তালাবদ্ধ বগুড়া তাই এখন চাবির খোঁজে।

বড় জেলা বগুড়ার ক্রীড়া সংস্থায় রাজনীতিরও খেলা হবে, এটা স্বাভাবিক। ক্ষমতার পালা বদলের সঙ্গে অনেক রাজনৈতিক নেতাই এসেছেন ক্রীড়া সংস্থায়। জেলার খেলার পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে নানা অভিযোগও আছে তাঁদের বিপক্ষে। সব লিখতে গেলে বিশাল উপন্যাস হয়ে যাবে। তবে দুটি উদাহরণ না দিলেই নয়। ২০০৪ সালের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বকুল নানা অভিযোগে সরে যাওয়ার পর এম আর সিদ্দিক লেমন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে পেয়ে যান সেই চেয়ার। সে সময় দিনের বেলায় ফ্লাডলাইট জ্বালিয়ে খেলা চালানো নিয়ে রিপোর্ট এসেছিল বগুড়ার স্থানীয় কাগজে। তখনকার কমিটির কয়েক জনের বিপক্ষে অভিযোগ ছিল ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের। তবে সরকারি অডিটে বেড়িয়ে আসে ৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা গরমিলের তথ্য। সেই টাকাটা অভিযুক্তরা মিলে দিয়ে দেয়ায় আর বিষয়টি ফৌজদারি মামলা পর্যন্ত গড়ায়নি। ২০০৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক থাকা শহীদুল ইসলামের বিপক্ষে (তিনি এখন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সিনিয়র সভাপতি) কয়েকজন অভিযোগ করলেন ব্যাট-বলসহ ক্রিকেট সামগ্রী বিতরণ না করে নষ্ট করার। ১৫-০৮-২০১১ সালে তোলা ক্রীড়াসামগ্রী নষ্টের সেই ছবি হাতে পাওয়ার কথা জানালে শহীদুল ইসলামের আত্মপক্ষ সমর্থন, 'এটা অপপ্রচার। আসলে আমরা ক্রীড়াসামগ্রীগুলো পেয়েছিলামই নষ্ট অবস্থায়। তাই বিতরণ করতে পারিনি। সত্যিটা হচ্ছে আমার সময়ে যথেষ্ট এগিয়েছিল বগুড়ার ক্রীড়াঙ্গন। ' শহীদুল ইসলামের সমর্থন করলেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলনও, 'অনেক নিম্নমানের ক্রীড়াসামগ্রী আসত বলে আমরা এসব না পাঠিয়ে টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলাম জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে। এখন কিন্তু ক্রীড়াসামগ্রীর বদলে বছরে এক লাখ টাকা করে দেয়া হচ্ছে। '

সব অঙ্গনেই নিজেদের লোকদের বাড়তি সুবিধা দেওয়াটা সংস্কৃতিই বানিয়ে ফেলেছেন বাংলাদেশের প্রভাবশালীরা। তারই জের ধরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পড়ছে সে অঞ্চলের খেলাধুলা। বগুড়ার ক্রীড়াঙ্গনে হচ্ছে সেটাই। নানা দ্বন্দ্বে আলোর মুখ দেখছে না ভলিবল লিগ। পাঁচ বছর আগের জমজমাট থাকা ভলিবলের ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট মুকু স্মৃতি ভলিবল এখন হয় না। গত কয়েক বছরে সাবেক খেলোয়াড় নুরুল আলম টুটুলের তত্ত্বাবধানে অবশ্য তরুণদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প হয়েছে কয়েকটা। অ্যাথলেটিকস, কাবাডি, হ্যান্ডবলের মতো খেলাগুলোয় চলছে দৈন্য দশা। ফুটবলে টুর্নামেন্ট হলেও নেই আগের জৌলুস। তবে মুশফিকুর রহিম অধিনায়ক হওয়ার পর ক্রিকেটে লেগেছে নতুন জোয়ার। যদিও তাতে ছেলেদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে মেয়েরা। আহসান হাবিব পরশ, মাশরাফি, তুষারদের হাত ধরে এগিয়ে চলেছে ব্যাডমিন্টনও।

করতোয়া নদীতীরের বগুড়া উত্তরবঙ্গের শিল্প ও বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। মহাস্থানগড় নামের প্রাচীন নগরী মাথা উঁচু করে আছে আজও। আছে আন্তর্জাতিক চার তারকা মানের হোটেল নাজ গার্ডেন। তবু এ শহরে কেন আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট হয় না? বিসিবি থেকে যা-ই বলা হোক না কেন, বগুড়াবাসী মনে করে এর পেছনেও রয়েছে রাজনীতি। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শহরের মাঠ বলেই অবহেলার শিকার পাঁচ ওয়ানডে আর এক টেস্টের সাক্ষী শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। যদিও সবচেয়ে কম সময় ও অর্থ ব্যয়ে তৈরি এ স্টেডিয়ামের ধারেকাছেও নেই বাংলাদেশের অন্য আর্ন্তজাতিক ভেন্যুগুলো। ২০০৪ যুব বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এ স্টেডিয়ামটি তৈরি হয়েছিল মাত্র ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে, তাও ফ্লাড লাইটসহ। অথচ ইদানীং ভেন্যু সংস্কারের পেছনেই ব্যয় হয় চান্দু স্টেডিয়ামের নির্মানব্যয়ের চেয়ে বহুগুণ বেশি অর্থে। ২০০৬ সালে বগুড়ার এই শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার কাছে প্রথম ওয়ানডে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ৪ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ও একমাত্র টেস্টে লঙ্কানদের কাছে হারের পর থেকেই এখানে অজেয় বাংলাদেশ। কেনিয়াকে ১৩১ রানে আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ওয়ানডের একটিতে ৬ উইকেট অন্যটিতে ২৬ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর অধিনায়ক হয়ে বগুড়াবাসীর গর্বের মুকুটে 'কোহিনুর' হয়ে আলো ছড়াচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। অথচ যে মাঠে খেলে বেড়ে ওঠা সেই শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে একটা টেস্ট ছাড়া আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়নি তাঁর?

মুশফিকের পথ ধরে জাতীয় দলে খেলছেন এ শহরের পেসার শফিউল ইসলাম। মায়শুকুর রহমান খেলেছেন অনূর্ধ্ব-২৩ দলে। ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৭ দল ২০০৩-০৪ ও ২০০৫-০৬ মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের চ্যাম্পিয়ন হলেও এরপর থেকে পিছিয়ে পড়ছে ক্রমেই। এখানে প্রিমিয়ার লিগ, প্রথম বিভাগ আর দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগ হয় নিয়মিতই। একটা সময় দ্বিতীয় বিভাগে ৬০টি ক্লাব থাকলেও এখন সেটা কমে দাঁড়িয়েছে অর্ধেকে। তাই দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাবগুলো রেলিগেশন চায় না কোনোভাবে। আর রেলিগেশন না থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হয়ে পড়েছে এই লিগ। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বীতা ফেরাতে বিশেষ পরিকল্পনা নেয়ার কথা ভাবছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এতদিন দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাবগুলোকে দেয়া হত ৬ হাজার টাকা অনুদান। সেরা ২০-এ থাকতে না পারলে সেই অনুদান আর পাওয়া যাবে না, এ ধরনের নিয়ম করা যায় কিনা তা নিয়েই ভাবছে তারা।

লেভেল টু করা কোচ মোসলেমউদ্দীনের জাদুর কাঠিতে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী মেয়েদের দল। খাদিজাতুল কোবরা ও রিতু মনি সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলে। শারমিন সুলতানা আবাহনীতে, লামিয়া লাবনী সমাজ কল্যাণ সমিতিতে, নূপুর দিপালী যুব সংঘে, মরিয়ম আক্তার, নিতু জহুরুল ইসলাম সিটি ক্লাবে, বৃষ্টি রায়, শরিফা শাহানারা সুযোগ পেয়েছেন গুলশান ইয়ুথ ক্লাবে। এই মেয়েরাই শক্তিশালী দল গড়ে বিভাগীয় প্রমীলা ক্রিকেটে টানা তিনবারের রাজশাহী অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন। রাজশাহী বিভাগীয় দলেও ছয়-সাতজন সুযোগ পায় বগুড়ার। তবে একটা সময় বিসিবির বেতনভুক্ত থাকা মোসলেমউদ্দীন আর বিসিবির চাকুরে নন। এ নিয়ে হতাশা জানালেও ক্রিকেটার তৈরির নেশাটা এখনো যায়নি তাঁর।

বগুড়ার ক্রীড়াঙ্গনে বাধা হয়ে আছে মাঠ আর খেলার চর্চা না থাকা। শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম ছাড়া সবেধন নীলমণি পৌরসভার আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে একটি ফুটবল স্টেডিয়াম থাকলেও নানা জটিলতায় দেড় দশক ধরে সেটা তালাবদ্ধ। জনসভা, মেলা আর কনসার্টের কারণে ঐতিহ্যবাহী আলতাফুন্নেছা মাঠ দিন দিন ছোট হয়ে আসছে যেন। পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নবাব মোহাম্মদ আলির কাছ থেকে মাঠটা পাওয়ার পর কখনো কখনো জনসভা হলেও মেলা আর কনসার্ট হতো না আগে। তবে অভিযোগ আছে মেয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমানের প্রভাবে মেলা আর কনসার্ট এখন নিয়মিত ব্যাপার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল গোলপোস্ট ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে তাঁত মেলার দোকান!

একটা সময় বিভিন্ন স্কুল মাঠে খেলতেন খেলোয়াড়রা। কিন্তু বেশির ভাগ স্কুল দুই শিফট চালু করায় সংকুচিত হয়ে এসেছে সেই সুযোগও। এর মাঝেই করোনেশন হাইস্কুল মাঠে এখনো প্রতিবছর হয় এলিট পেইন্ট গোল্ড কাপ ফুটবল। সেন্ট্রাল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের পাশাপাশি আছে সরকারি আজিজুল হক কলেজেরও দুটি মাঠ। মাঠ থাকলেও অবকাঠামো নেই সেখানে। এজন্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার সিনিয়র সহ সভাপতি শহীদুল ইসলামের দাবী,' শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে যেহেতু নানা বাধ্যবাধকতায় খেলা যায় না তাই একটা ভালো মানের মাঠ দরকার এখানে। মাটিডালি, বনানী, গাবতলী এমনকি সাতমাথার পাশেও স্টেডিয়াম করার মত মাঠ আছে। জরিপও করা হয়েছে এসব নিয়ে। সেই জরিপের ফাইল আটকা পড়ে আছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে। '

ব্যাডমিন্টন ইনডোরের খেলা হওয়ায় মাঠ সংকটের অজুহাত নেই। খেলাটা অবশ্য বছরজুড়ে চালু থাকে বগুড়ায়। খেলার মধ্যে থাকাতেই মাশরাফিকে সঙ্গে নিয়ে আহসান হাবিব পরশ সোনা জিতেছেন সর্বশেষ বাংলাদেশ গেমসের দ্বৈতে। এককে ছয়বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়নও পরশ। শফি মাহমুদ তুষার ২০০৫ সালে জাতীয় অনূর্ধ্ব ১৯-এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০০৯ সালে বিমানের হয়ে জিতেছিলেন প্রথম বিভাগ লিগও।

সেই ১৯৮২ সালে তবিবর রহমান জাতীয় অ্যাথলেটিকসে ৪০০ মিটারে সোনা জিতে বগুড়ার নাম উজ্জ্বল করলেও ২০০৮ পর্যন্ত ১৭ বছর মাঠে গড়ায়নি অ্যাথলেটিকস। ওয়ান ইলেভেনের পর জেলা ক্রীড়ায় অ্যাথলেটিকস অন্তর্ভুক্ত হলেও ২০১২ সাল থেকে বন্ধ আবারও। সেবার বিভিন্ন স্কুলের ৩০০ ছেলেমেয়ে ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিল, কিন্তু জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতা সেটা আবারও করতে বললে শুরু হয় টানাপড়েন। অ্যাথলেটিকস এখনো রয়েছে সেই টানাটানিতেই! জাতীয় খেলা কাবাডিতে ট্র্যাজেডিই হয়েছিল বগুড়ায়। ২০১৩ সালে সেন্ট্রাল স্কুল মাঠে পুলিশ কাবাডি খেলার সময় মারা গিয়েছিলেন একজন। সেই থেকে এখানে বন্ধ খেলাটা।

সাঁতারে জাতীয় পর্যায়ে আলো ছড়ানো নিয়াজ মোর্শেদ এখন নৌবাহিনীর কোচ। জাতীয় পর্যায়ে ভালো করছেন মরিয়ম খাতুন, নয়নরাও। তবে বাস্তবতা হচ্ছে ৯ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে এই সুইমিং পুলের। রিসাইকেলিং মেশিন না থাকায় সপ্তাহে পানি তুলতে হত প্রায় প্রতিদিন। তাই বিদ্যুৎ বিল যেখানে আসার কথা মাসে পাঁচ হাজার সেখানে আসত ৫০ হাজার টাকা। সুইমিং পুলটি চালু করতে হাল ছেড়ে দিয়েছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলনও, 'বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের ৯ লাখ টাকা না হয় দিলাম। কিন্তু লাভ কী? রিসাইকেলিং মেশিন না থাকায় ময়লা পানিতে সাঁতার কাটবে কে? বড়লোকের ছেলেদের জন্য হয়তো এটা চালু রাখা যায়, তবে তাতে খেলোয়াড়দের কোনো লাভ হবে না। '

সাঁতারুদের সেভাবে কেউ খোঁজ না রাখায় মরিয়ম আর নয়ন কুষ্টিয়ার হয়ে গত বছর অংশ নিয়েছিল জাতীয় সাঁতারে। দুজন মিলে জাতীয় পদক জিতেছিল ১৫টির মতো। সেই মরিয়ম এবারের বয়সভিত্তিক জাতীয় সাঁতারে খেলেছে বগুড়ার হয়ে। তাহলে আগের বছর কেন কুষ্টিয়ার হয়ে খেলেছিল সে? জবাবে মরিয়ম জানাল, 'আমাকে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছিল কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা। বগুড়ার যারা সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছিল কেউ সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি। ' সামান্য এই কটা টাকা পেলে মরিয়ম বগুড়ার বদলে কুষ্টিয়ার হয়ে খেলত না কোনোভাবেই? বগুড়ার ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে খোঁজখবর করার সময় এ বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছিল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে। তাতে চক্ষুলজ্জা হয়েছে কর্তাদের, তাই কুষ্টিয়ার বদলে এবার নিজের জেলার হয়েই খেলতে পেরেছে মরিয়ম।

শেষ করা যাক ফুটবল দিয়ে। অমলেশ সেন, শহীদুল ইসলাম শিমুল, শাফিনুর রহমান সম্রাটদের শহরের ফুটবলে আগের সেই জৌলুস নেই। গত লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল এখন পর্যন্ত শেষ করতে পারেনি জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। শহীদ তারেক সংঘ ও সানসাইন স্পোর্টিং ক্লাবের ফাইনাল পণ্ড হয়েছে একটা গোল মানা-না মানা নিয়ে! দুই ক্লাবের সমঝোতা হওয়ায় এবার লিগ শুরুর আগে ফাইনালটা মাঠে গড়াবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খাজা আবু হায়াত হিরু। বলে রাখা ভালো হিরু আবার সানসাইন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আর শহীদ তারেক সংঘ ক্লাব তাঁরই পাড়ার দল। নিয়মিত লিগ না হলেও সমাজসেবা সমিতির উদ্যোগে এলিট পেইন্ট গোল্ড কাপ হয়ে আসছে গত দুই বছর ধরে। এ ছাড়া নিয়মিত হয় আন্তউপজেলা গোল্ড কাপ ও মহাস্থান ট্রফি। একটা সময় আন্তইউনিয়ন ও আন্তওয়ার্ড ফুটবল লিগে দর্শকদের জায়গা দেওয়া যেত না পৌরসভা আলতাফুন্নেছা মাঠে। অথচ এক যুগের বেশি বন্ধ এই টুর্নামেন্টগুলো।

 

 



সাতদিনের সেরা